দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিষয় , শাখা পরিবর্তন ও ছাড়পত্রের নোটিশ।
প্রবল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এক সময়ের অবহেলিত ও অনগ্রসর জনপথ হিসেবে পরিচিতি ছিল বংলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। এই অনগ্রসরাতর পিছনে বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান কারণ ছিল উচ্চ শিক্ষার শূণ্যতা। বৃহৎ এই এলাকা পাথরঘাটা, বামনা, কাঠালিয়া ও শরণখোলা জুড়ে কোন উচ্চ শিক্ষার সুযোগ ছিল না। আর তখনই এই এলাকার তরুন-তরুনীদের জীবন-জীবিকার সংগ্রামরে পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুপ্ত বাসনাকে বাস্তবায়নের প্রায়াসে মঠবাড়িয়ার কতিপয় বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৬৯ খ্রিঃ প্রতিষ্ঠিত হয় দক্ষিণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী আজকের এই মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ। তখন এই প্রতিষ্ঠানটি স্বল্প কয়েকজন ছাত্র/ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ ছিলেন জনাব আজহারুল হক। শিক্ষক ছিলেন মাত্র ০৯ জন। দারিদ্রের নিষ্ঠুর কষাঘাত ও সমাজের নির্মম বাস্তবতার কারণে কর্মজীবনে প্রবেশের পরও উচ্চ শিক্ষার প্রতি আগ্রহের কারণে প্রতি বছরই কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৯৬ জন।
অবস্থাগত গুরুত্ব, জনগনের দাবী সর্বোপরি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজেনর তাদিগে ১৯৮৪ খ্রিঃ এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয়। ফলে অধিক অভিজ্ঞ ও যোগ্যতা সম্পন্ন অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের পদায়ন হতে থাকে। আর সমান তালে চলতে থাকে শিক্ষার গুনগত মানের উন্নয়ন। এই কলেজের শিক্ষার্থীরা পাশ করে দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্রে অধ্যয়ন করছে। আর শিক্ষা জীবন শেষে এই সকল মেধাবী শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনেও তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়ে উঠেছে। ফলে বি.সি.এস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন রয়েছে।
এক সময়কার মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজের ছাত্র জনাব গোলাম মোস্তফা সফলভাবে শিক্ষা জীবন শেষ করে বি.সি.এস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যডারে অত্র প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। পরে তিনি এই কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন। তারই একান্ত প্রচেষ্টায় মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। এতে অত্র এলাকায় উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আর এক বিরাট অগ্রগতি সাধিত হয়।
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর এম. এইচ. খালেদ তাঁর কর্মদক্ষতার মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ কলেজ ক্যাম্পাস আকর্ষণীয় ও পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে এতদ অঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বেগবান বরার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।